
দিব্যেন্দু গোস্বামী
পশ্চিমবঙ্গ
প্রায় দেড় মাস ধরে প্রয়াগে মহা কুম্ভের আয়োজন করা হয়েছিল সেই কুম্ভের শেষ দিন ২৬ শে ফেব্রুয়ারি। ২৬ শে ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠানিকভাবে এই মেলার সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়। মেলা কে কেন্দ্র করে দু-দুবার অগ্নী সংযোগের ঘটনা ঘটেছিল পদ পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ত্রিশেরও বেশি মানুষ তাই সহজেই অনুমেয় যে এখানে কি পরিমান সনাতনী হিন্দুদের ভিড় জমিয়েছিল সারা প্রয়াগে। এই মেলার বৈশিষ্ট্য সাধু সন্তদের স্নানযাত্রা যেখানে গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতী তিনটি নদী একত্রিত হয়েছে যা ত্রিবেনী সঙ্গম হিসাবেই পরিচিত সেখানে একবার ডুব দিলেই তার সকল মনস্কামনা পূণ্য হবে এমনই ধারণা নিয়ে কুম্ভে এসেছিলেন সনাতনী হিন্দুরা। অন্যদিকে পুণ্য লাভ করবেন বলে হাজির হন হাজার হাজার ,লাখো লাখো, কোটি কোটি মানুষ। এখনো পর্যন্ত পাওয়া খবরে প্রায় ৫০ কোটিরও বেশি সনাতন ধর্মালম্বির মানুষ এখানে হাজির হয়েছিলেন। যার মধ্যে প্রথম শাড়িতেই ছিলেন নাগা সাধুরা। এই নাগা সাধুরা মেলায় আসেন ভক্তদের কে আশীর্বাদ করেন তারপর কোথায় যেন চলে যান। তারপর আর তাদের কোন খোঁজ পাওয়া যায় না। বলা আছে যে হিমালয়ের কোন এক গহ্বরে তারা নাকি ওখানেই রাত দিন মহাদেবের সাধনায় লিন থাকেন। খাদ্য বলতে গেলে কেমন কিছুই থাকে না। কঠোর সংযম দিয়ে একাত্মা ভাবে মহাদেবের ধ্যান করে থাকেন। হিমালয় কিম্বা কৈলাস পর্বতের গুহায় রাত যখন নিঝুম হয় তখনই সেখান থেকে বেরিয়ে আসে ওঁ শব্দটি। যেটি সকলেই শুনেছেন এই ভাবেই তারা সিদ্ধিলাভ করেন কিচ্ছ সাধনের মাধ্যমে। অন্যদিকে এই ত্রিবেণী সঙ্গমের মধ্যে কোটি কোটি মানুষের আগমনের ফলে জলে যে নানান রকমের প্রভাব পড়তে পারে সেই কারণেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যেই উঠে পড়ে লেগেছে। তাদের বক্তব্য গঙ্গাকে অপবিত্র করা হয়েছে। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখা ভালো, গঙ্গা কোন বর্ষাকালের নদী নয়, হিমবাহের নাম গঙ্গোত্রী এই গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে গঙ্গা। এই গঙ্গা সব সময় প্রবাহমান। তাই এখানে যা কিছু করেছে সবই ধৌত হয়ে চলে গিয়েছে বহু দূরে সাইন্টিফিক কস জানাচ্ছে এমনই তথ্য। যদিও যোগী সরকার সমস্ত রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যে সমস্ত ফুল মালা বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল এমনকি বালির যে তট তা পরিষ্কার করার জন্য প্রায় 400 ঝাড়ুদার কে মজুদ করা হয়েছে। যারা সমস্ত রকম ভাবে ওই তট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখছে আর হয়তো এই কুম্ভ মেলায় সবারই সঙ্গে সবার যে মেলবন্ধন তা আর ঘটবে না। কুম্ভ, অর্ধ কুম্ভ এখানে সাধু-সন্তদের ভিড় হবে ঠিক কথায় কিন্তু মহাকুম্ভ 144 বছর পর যা আসে সেখানে যে জনসমুদ্র দেখা যায় সেই দৃশ্য হয়তো আর চোখে পড়বে না। তার জন্য অনেক হিন্দু সনাতনী যারা এখানে এসেছিলেন তাদের চোখের কোণে হালকা জলবিন্দু দেখা গিয়েছে। এই জলবিন্দু প্রমাণ করে দেয় গঙ্গা যমুনা-সরস্বতীর মিলনক্ষেত্র। প্রয়োগের বিশেষত্ব।