
দিব্যেন্দু গোস্বামী
বীরভূম, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
দেউচা পাঁচামীতে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটছে তা দেখার জন্য একদল সমাজকর্মীর ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’ সেখানে যাচ্ছিল। গত রাতে হোটেলে পৌঁছানোর পরে তাঁদের হোটেলে পুলিশ আর তৃণমূল তালা লাগিয়ে দেয় যাতে তাঁরা বের হতে না পারেন। সেলিম এই ঘটনার উল্লেখ করে বলেছেন, গণতন্ত্রের ওপরে আক্রমণে তৃণমূলের এখন এই নতুন কৌশল হয়েছে, সিপিআই(এম’র দপ্তর সহ নানা জায়গায় প্রতিবাদীদের ‘তালাবন্ধ’ করে রাখার চেষ্টা। এদিন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের কর্মীরা তালা লাগানোর প্রতিবাদ করেছেন এবং তারপরে দেউচা যাওয়ার পথে তাঁদের তৃণমূলের লোকজন মারধর করেছে, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে। জেলাশাসক তাঁদের সঙ্গে দেখা করেননি, একজন আহত হয়ে হাসপাতালে আছেন। পুলিশ প্রশাসন ইতিমধ্যেই দেউচায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে যাতে সেখানকার খবর বাইরে না আসে এবং বাইরের খবর সেখানকার বাসিন্দারা না পেতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী নামিয়েছেন প্রতিবাদীদের দমন করতে। শিল্পক্ষেত্র নয়, উনি যুদ্ধক্ষেত্র বানাচ্ছেন দেউচায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে মুখ্যমন্ত্রী দমন কাজ ও ভীতি প্রদর্শন করছেন দেউচা পাঁচামীতে। সিপিআই(এম) মুখ্যমন্ত্রীর এই দমননীতিকে ধিক্কার জানাচ্ছে, উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের দল যে অধিকার রক্ষায় এবং পরিবেশ রক্ষায় দেউচা পাঁচামির মানুষের আন্দোলনের পাশে সবাইকে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।
সেলিম প্রশ্ন তুলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী যদি সত্যিই শিল্প করতে চান তাহলে নিজে দেউচায় গিয়ে সেই শিল্পের উদ্বোধন করলেন না কেন? কোনও শিল্পায়ন নয়, মুখ্যমন্ত্রী দেউচা পাঁচামীতে আদিবাসীদের জঙ্গলের জমি দখল করে পাথর খাদানের জন্য দিতে চান বেআইনিভাবে। মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন, দেউচার মানুষের সঙ্গে সরকার কোনও আলোচনাই করেনি, সম্মতি আদায় তো পরের কথা, তাঁদের প্রকল্পের সম্পর্কে কিছু জানানোই হয়নি। কোনও পরিবেশগত প্রভাবের পরীক্ষা করে ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি, জোর করে আদিবাসীদের জমি থেকে উচ্ছেদ করে দখল করা হচ্ছে। কোন প্রকল্পে কার টাকা আসবে, সেই টাকায় কী হবে, এই সব নিয়েই লুকোছাপা করে বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করার প্রকল্প চাপানো হচ্ছে।